স্বামী বিদেশ, স্ত্রীরা বিপথগামী! কিন্তু কেন?

স্বামী বিদেশ, স্ত্রীরা বিপথগামী! কিন্তু কেন?

Brand Bazaar

 

সুখের আশায় বিদেশ গিয়ে কষ্টার্জিত টাকা, স্বর্ণ ও স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে পথে বসছে ঝিনাইদহের বিভিন্ন গ্রামের যুবকরা। দীর্ঘদিন যাবৎ স্বামী বিদেশ থাকার কারণে অনেক স্ত্রীরা বিপথগামী হয়ে গেছে। পরকীয়ায় জড়িয়ে অনেকে বিদেশ থেকে স্বামীর পাঠানো টাকা নিয়ে ঘর বাধছে অন্য পুরুষের সাথে। যার কারণে সামাজিক সংকটের পাশাপাশি সৃষ্টি হচ্ছে পারিবারিক বিরোধ।

স্বামী বিদেশ, স্ত্রীরা বিপথগামী! কিন্তু কেন?

জেলার সদর উপজেলার গোবিন্দপুরের বাবুল দীর্ঘদিন ধরে বিদেশ থাকেন। তিনি সেখান থেকে নিজের কষ্টার্জিত টাকা পাঠাতেন স্ত্রী সাগরির কাছে। সেই জমানো স্বামীর টাকা নিয়ে এক সময় সাগরি পালিয়ে যায় বাবার বাড়ির গ্রামের মধ্য বয়সী এক পুরুষের সাথে।

একইভাবে সদর উপজেলার গোবরাপাড়া গ্রামের সাবদার হোসেনের স্ত্রী রেহানা খাতুন স্বামীর পাঠানো টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায় একই গ্রামের নইমুলের ছেলে পিন্টুর সাথে।

নগরবাথান যাদবপুর গ্রামের সুজনের স্ত্রী স্বামীর পাঠানো ১০ লাখ টাকা নিয়ে অন্যের ঘরে ওঠে। হরিণাকুন্ডু উপজেলার সোনাতনপুর গ্রামের সফিউর রহমানের স্ত্রী রোজিনা খাতুন স্বামীর পাঠানো ৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে স্বামীর ঘর ছাড়ে।

ঝিনাইদহের ডাকবাংলা বাজারের মাগুরাপাড়ার আনিছুর রহমান থাকেন ওমানে। গত দুই বছর আগে সোনালী খাতুনের সাথে আনিছুরের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ঘরে ৮ মাসের একটি সন্তানও আছে। অথচ স্ত্রী সোনালী খাতুন স্বামীর পাঠানো অর্থ নিয়ে ফুফাতো ভাই তাজমুলের হাত ধরে নিরুদ্দেশ হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন গ্রামে এমন ঘটনা ঘটছে। কোন কোন স্ত্রী পারিবারিক মধ্যস্থতায় স্বামীর ঘরে ফিরলেও অনেক স্ত্রী আবার ফিরছেন না।

এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন বলেন, তার ইউনিয়নে এ রকম প্রায় ৩/৪টি ঘটনা ঘটেছে। স্বামী বিদেশ থাকার কারণে স্ত্রীরা অন্যের সাথে চলে যাচ্ছেন। সামাজিক বন্ধনের অভাব ও ধর্মীয় অনুশাসনের অভাবে এমনটি ঘটছে বলে তিনি মনে করছেন।

জেলার সাগান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দীন আল মামুন বলেন, তার ইউনিয়নেও ২/১টি এমন ঘটনা আছে। তিনি মনে করেন স্বামী বিদেশ থাকায় এমন ঘটনার সূত্রপাত।

ঝিনাইদহের ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের এসআই হাসানুজ্জামান জানান, শুক্রবারও এমন একটি সামাজিক বিরোধের মীমাংসা করা হয়েছে তার দপ্তরে।

ঝিনাইদহ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি ব্যুরোর সহকারী পরিচালক সবিতা রানী মজুমদার জানান, ১৯৭৬ সাল থেকে ঝিনাইদহের মানুষ বিদেশে যাওয়া আসা করছে। ২০১৭ সালে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই জেলা থেকে ৬০ হাজার ৭৮৭ জন পুরুষ ও ৬ হাজার ৭৫৬ জন নারী বিদেশে কাজ করছেন। সর্বমোট জেলা থেকে ৬৭ হাজার ৫৪৩ জন বিদেশে অবস্থান করছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment